পাদ কয় প্রকার ? পাদ কী?
পাদ কয় প্রকার ? পাদ কী? শিরেোনাম দেখে ইতিমধ্যে হয়ত আপনি একটু মুচকি হাসিও দিতে পারেন। কিন্তু মানুষের জানার চাহিদার তো কোন শেষ নেই। আসুন আজকে পাদ সম্পর্কে কিছু তথ্য জেনে নেয়া যাক।
পাদ শব্দের শাব্দিক অর্থ হচ্ছে আপন বায়ু। শব্দটি বিশেষ্য।
প্যাত…… পোত……. পু….ত, পো…….ত শব্দটি শোনেনি এমন কোন মানুষ পৃথিবীতে খুঁজে পাওয়া যাবেনা। আর এই শব্দ বা নিঃশব্দে পাদ নামক বায়ু নির্গত করেন নি এমন কোন মানুষও খুজে পাওয়া যাবে না। এমনকি আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো-বাইডেন থেকে শুরু করে একজন ঝাড়ুদার সবাই কম-বেশি চাপিয়ে রাখতে রাখতে এক সময় ফু……স করে ছেড়ে দেয়। আর তার পরে শুরু হয় নাক বিরক্তিকর একটা পরিস্থিতি। তার মধ্যে আবার উচ্চ শব্দযুক্ত পাদ কম গন্ধযুক্ত আর শব্দহীন পাদ বেশ ভয়ানক পরিস্থিতির সৃষ্টি করতে পারে।
ধরুন একটি ছোট ঘরে অনেক মানুষ আছে এর মধ্যে কেউ শব্দহীন এটি ফুঁস পাদ মেরে দিল, তখন নাক বন্ধ করলেও পাদের ঘন বাতাস একবার নাকে প্রবেশ করলে খবর আছে। না পারবেন থুথু ফেলতে, আবার না পারবেন থুথু গিলে ফেলতে, কি একটা অবস্থা! এ সময় মনে হবে যে, ঐ পাদ দাতাকে খুঁজে বের করে পাছায় কষে কয়েকটা …. মারি যাতে শালার পশ্চাৎদেশের ফুটো চিরদিনের জন্য বন্ধ হয়ে যায়। আর কোনদিন আর এমন পাদ মারতে না পারে।
বেশ মজা হয়ে গেল, এবার আসুন জেনে যাক পাদ কী? মানুষ পাদে কেন?
পাদ কী?
পাদের সজ্ঞা
“পেটে উৎপন্ন গওয়া গন্ধযুক্ত বা গন্ধহীন বাতাস বা গ্যাস পায়ুপথে স্বশব্দে বা নিঃশব্দে দেহের বাইরের পরিবেশে মুক্ত হওয়াকে পাদ বলে”
Info: Wikipedia
পাদের ইংরেজী কী?
পাদের ইংরেজী হলো Fart বা Flatulence
Sunonym: Breaking wind, farting, faltus wind
পাদ শব্দের বাংলা সমর্থক শব্দ:
পর্দ্দন, পন্দ্রবায়ু, আপন বায়ু, অধঃবায়ু, অধবায়ু, বাতকর্ম, নিম্নগামী বায়ু ইত্যাদি
পাদ শব্দের উৎপত্তিঃ
পাদের ইংরেজী প্রতিশদ্ব flatulence এর উৎপত্তি হয়েছে ল্যাটিন শব্দ Flatus থেকে যার অর্থ বায়ু নির্গত করা। আমার সংস্কৃত ভাষার শব্দ “পর্দ্দ” থেকে “পাদ” শব্দের উৎপত্তি হয়েছে।
আপনি জানলে অবাক হবেন যে, খৃষ্টপূর্ব ১৯০০ সালে সুমেরীর সভ্যতায় পাদ নিয়ে কৌতুক প্রচলিত ছিল।
পাদ কিভাবে সৃষ্টি হয়?
দুইভাবে পাদ সৃষ্টি হয়।
১। মানুষ প্রতিদিন প্রশ্বাস গ্রহনের মাধ্যমে প্রচুর বাতাস ফুসফুসে গ্রহন করে, এটি আবার নিঃসরন ও করে। কিন্তু যে বাতাস গিলে ফেলে তা পেটের ভেতর প্রবেশ করে। আকার খাদ্য বা পানি গ্রহনের সময় প্রচুর বাতাস পেটে চলে যায়। এই বাতাস আর বের হতে পারে না। এসব বাতাস থেকে কিছু অংশ ঢেকুর তোলার মাধ্যমে বের হয়। বেশিরভাগ বাতাস পরিপাক নালির লম্বা পথ অতিক্রম করে পায়ু পথে বের হয় পদের মাধ্যমে।
২। আমরা যে খাবার খাই তা পরিপাকতন্ত্র থেকে ক্ষরিত এনজাইমের মাধ্যমে হজম হয়। এই খাবারের হজম না হওয়া অংশ ব্যাকটেরিয়ার মাধ্যমে ফারমেন্টশন বা গাঁজন প্রক্রিয়ার সরল খাবারে পরিণত হয়। ফারমেন্টেশনের কারণে পেটের ভেতর মিথেন, কার্বনডাইঅক্সাইড, হাইড্রোজেন গ্যাস উৎপন্ন হয়। এই গ্যাসগুলোর সাথে গিলে খাওয়া বাতাসের অক্সিজেন ও নাইট্রোজেন গ্যাস যুক্ত হয়।
সময়ের সাথে সাথে গ্যাসের পরিমান বাড়তে থাকে, এই বিপুল পরিমান গ্যস বের হওয়ার একমাত্র পথ পায়ুপথ। পায়ুপথে পাদ হিসেবেই এই গ্যাসগুলো বের হয়ে যায়। অবাক করার মথ তথ্য হচ্ছে, মানুষের পরিপাকতন্ত্রে প্রায় ১০০ ট্রিলিয়ন ব্যাকটেরিয়া থাকে। এই ব্যাকটেরিয়ার দল প্রতিদিন মানুষের পেটে ০.৫ থেকে ৩ টিার গ্যাস উৎপাদন করে। প্রতিদিন একজন মানুষ মানুষের গিলে খাওয়া বাসাত ও ব্যাকটেরিয়ার ফারমেন্টেশনে উৎপন্ন মোট গ্যাসের পমিরান ০.৬ থেকে ৬.৮ লিটার।
পাদের উপাদানঃ
পাদ কয় প্রকার?
পাদের প্রকারভেদ
শব্দের উপর ভিত্তি করে পাদ ২ প্রকার।
১। শব্দযুক্ত পাদ বা ঠাস পাদ।
২। শব্দহীন পাদ বা ফুস পাদ।
১। শব্দযুক্ত পাদ বা ঠাস পাদঃ
পুউউউত, পোওওওত, পওওওতাস ইত্যাদি মন মাতানো সুরের ঝংকার তুলে মানুষের মনকে আনন্দকারী শব্দে যে পাদ নির্গত হয় তাকে শব্দযুক্ত পাদ বা ঠাস পাদ বলে। শব্দ দূষণের অভিযোগ পাওয়া গেলেও এই পাদ বেশিরভাগ সময়ই গন্ধহীন হয়। বাড়ীতে বাবার শব্দযুক্ত পাদের শব্দে যেমন শিশু আনন্দিত হয় তেমনি শাশুড়ির শব্দযুক্ত পাদে জামাই বড়ই লজ্জিত হয়। মসজিদে নামাজরত মুসল্লির শব্দযুক্ত পাদের কারণে সবাই প্রাণপণে চোয়াল শক্ত করে দাঁত কাঁমড়ে নিঃশব্দ হাসিতে ফেটে পরে সবাই। ভরা মজলিসে, বাস, ট্রেনে শব্দযুক্ত পাদ মানুষকে বিনামূল্যে বিনোদিত করে।
২। শব্দহীন পাদ বা ফুস পাদঃ
পেটের ভেতর ভুটভাট শব্দ করতে করতে একসময় শব্দ উৎপাদন ক্ষমতা হারিয়ে নিঃশব্দে যে পাদ নির্গত হয় তাকে শব্দহীন বা ফুস পাদ বলে। ৯৯% ক্ষেত্রেই শব্দহীন পাদ ভয়ানক গন্ধযুক্ত হয়ে থাকে। ভরা ক্লাস রুমে এই পাদের মহাত্ম্য বেশি অনুধাবন করা যায়।
এ ধরনের পাদগুলো সাধারণ পরিবেশ দূষণ করে থাকে। কথায় নয় কাজে বিশ্বাসী এমন কথার উপযুক্ত প্রমান এই পাদ। এই পাদ দাতার কাছে করজোড়ে অনুরোধ পাদ মারার পর অবশ্যই পাছার কাপড় ঝাড়া দিবেন, এতে পাদের প্রভাবে ঘন বাতাস দ্রুত পাতলা হবে। মানুষ কম ক্ষতিগ্রস্থ হবে।
এছাড়াও পাদ বিশেষজ্ঞরা পাদকে আরো কয়েকটি ভাগে ভাগ করে থাকেন-
চোরা পাদঃ
অন্তত ৩ দিন পায়খানা বন্ধ থাকার ফলে সৃষ্ট পাদ হিরোশিমার বোমার চাইতেও ভয়ংকর।
ঝোল পাদঃ
ডায়রিয়ার সময় সাধারণ এই পাদ হয়ে থাকে। সাবধান! চলাফিরার মুহুর্তে দেয়া একটু বিপদজনক। যে কোন সময় হলুদ ঝোলে মাখামাখি হয়ে যেতে পারে আনপার প্যান্ট বা পাজামা। সাধারণত এ পাদ ফেড়ফেড় বা ভ্যাড়ভ্যার শব্দের হয়ে থাকে।
পাদ কী জীবান ছড়ায়?
না.. পাদে আজ পর্যন্ত কোন জীবানুর উপস্থিতি আবিষ্কার হয়নি। তাই পাদের মাধ্যমে জীবানু ছড়ানোর সম্ভাবনা নেই। তবে ঝোল পাদ থেকে সাবধান! যদি পাদের সাথে পাতলা ঝোল বের হয়ে যায় তাহলে জীবানু ছড়াতে পারে। তাই জনসম্মুখে এ ধরনের স্যুপ বিশিষ্ট পাদ মেরে জনগণের ক্ষতি করবেন না।
কিভাবে একটি আরামদায়ক পাদ মারবেন?
আপনি নিশ্চই জানেন খুব টাইট প্যান্ট পড়ে থাকলে পাদ মেরে আরাম পাবেন না। তার উপরে যদি স্বাস্থ্য মেদযুক্ত হয় তাহলে তো কথাই নেই। তাই পাদ মারা আগে নির্জন একটা জায়গা নির্বাচন করুন। তবে আমাদের দেশে প্রশাবখানা বা পায়খানা থাকা সত্বেও কেউ পাদখানা করছে বলে আমার জানা নাই। যেহেতু পাদখানা নেই তাই কি আর করার! এরপর প্যান্ট এমনভাবে উঁচু করে টেনে ধরুন যাতে, পেছনের ছিদ্রপথ চাপমুক্ত থাকে। এবার লম্বা শ্বাস নিয়ে আরামছে পাদ ছাড়ুন। আর যারা একটু বেশি ফ্যাটি তাদের জন্য অবশ্যই দুইজন এ্যাসিষ্ট্যান্ট রাখতে পারেন, পাদ মারা সময় আপনার পাছার দুই ধার দুই দিক থেকে টেনে ফাকা করে রাখার জন্য। এতে করে আপনি পাদ মারা আসল সুখ অনুভব করতে পারবেন। পাদ মারার জন্য সবচেয়ে আরামদায়ক পেশাক হ’ল লুঙ্গি। আপনি লুঙ্গি পড়ে মনের সুখে পাদ মারতে পারবেন।
মাদ মারার ক্ষেত্রে যে সতর্কতা অবলম্বন করবেন-
যত্রতত্র, অসময়ে, জনসম্মুখে, বদ্ধ ঘরে পাদ মারবেন না। এটি আপনার মান-সম্মান নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে পারে তাই নিচের নিয়ম মেনে পাদ মারুন এবং নিজের সম্মান রক্ষা করুন।
ভদ্রভাবে পাদ মারা নিয়ম-
১। পেট ভড়ে মাংশ খাওয়ার ৩দিনের মধ্যেও যদি আপনার পায়খানা না হয় তাহলে ধরে নিবেন আপনার পাদ পারমানবিক বোমার চেয়ে কোন অংশে কম নয় বা শশ্যক্ষেতে গান্ধী পোকা তাড়ানোর ঔষধের চেয়েও মারাত্মক হতে পারে। তাই এটি জনবদ্ধ ঘরে এই ধরনের পাদ জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি স্বরুপ, এমনকি যদি খাওয়ার সময় বা খাওয়ার সম্মুখে এমন এক পাদ দেওয়ার চিন্তাও করে থাকেন তাহলে এর প্রভাবে অনেকের খাদ্যের প্রতি চিরতরে অনিহা সৃষ্টি হতে পারে। তাই এমন পরিস্থিতিতে আপনি লোকালয় থেকে কমপক্ষে ১০০ গজ দূরে অবস্থান নিয়ে নির্জন জনশূণ্য স্থান নির্বাচন করুন। অথবা কোন শশ্যক্ষেত বেছে নিতে পারেন যেখানে গান্ধী পোকার আক্রমন হয়েছে তাতে ঐ ক্ষেতের উপকারও হবে বটে।
২। সকালবেলা ঘুম থেকে জাগার পর জনসম্মুখে বায়ু ত্যাগ করিবেন না। এতে গন্ধ গলধঃকরণকারীর বমি হইতে পারে।
৩। শব্দযুক্ত পাদ কোলাহল আছে এমন স্থানে মারিবেন তাতে অন্তত সম্মানটুকু রক্ষা হইবে।
চাকুরীর বিজ্ঞপ্তি দেখতে ক্লিক করুন
No comments:
Post a Comment